মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই ফসলী জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করেছে প্রভাবশালী চক্র। প্রকাশ্যে দিবালোকে ফসলী জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করলেও প্রশাসনের নেই কোন মাথা ব্যাথা। এরই মধ্যে শুক্রবার বিকেলে ইটভাটার মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় প্রাণ হারিয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী কলেজ ছাত্র। এ ঘটনায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েঠে। দ্রুত প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে সরেজমিন জামালপুর-কোলারহাট সড়কের বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া বৃ-মাগুরা এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, সড়কের পাশেই ইটভাটার অফিস ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কয়েকজন মিস্ত্রি ঘর নির্মাণ কাজে ব্যস্ত। বিভিন্ন ফসলের মধ্যে ইট ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি সংগ্রহ করে ট্রাক্টর সহ বিভিন্ন দেশী তৈরী যানবাহনে করে এনে স্তুপ তৈরী করা হচ্ছে। ওই এলাকার সড়কে এখন ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ফসলী জমিতে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেকেই জমির মালিক লীজ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ওই এলাকার ফসলের মাঠের ক্ষতি হবে। এরই মধ্যে শুক্রবার (৯ মে) বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামের পরিতোষ সরকরের ছেলে কলেজ ছাত্র সজীব সরকার প্রনয় তার কাকা রমা প্রসাদ সরকারের বৌভাত অনুষ্ঠানের প্লাস্টিকের গ্লাস আনার জন্য বাড়ী থেকে জামালপুর বাজারে যাচ্ছিল। নলিয়া মেলার সামনে পৌছালে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর বৃমাগুরা নতুন ভাটায় মাটি নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় মুখোমুখি সংর্ঘষে মোটরসাইকেল আরোহী সজীব সরকার প্রনয় ঘটনাস্থলেই মারা যান। এতে লাশ ফেলেই যেন ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হলো। দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ইটভাটার কাজে থাকা মিস্ত্রিরা বলেন, এ ইটভাটাটি করছেন বালিয়াকান্দির জলিল। জলিলের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এখনো ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করি নাই। অফিস ঘর নির্মাণ ও মাটি আনা হচ্ছে। ফসলী জমিতে ইটভাটা করার কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অফিসে খোঁজ নিতে বলে ফোন কেটে দেন।
বালিয়াকান্দি অফিসার ইনচার্জ মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, মাটি টানা ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের তদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে কেউ কোন আবেদন করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফসলী জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কোন সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজবাড়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ হারুন-অর রশীদ বলেন, ইটভাটা নির্মাণকারী কেউ আমাদের নিকট আবেদন করেনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।