ঢাকাসোমবার , ২৬ মে ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরম পুরণে নেওয়া বাড়তি টাকা ভাগ-বাটোয়ারায় তৎপর কর্তৃপক্ষ

মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
মে ২৬, ২০২৫ ৬:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় বাড়তি ফি নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পত ২৩ ডিসেম্বর বিকালে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিক্ষকদের গ্রহন করা বাড়তি টাকা অভিভাবকদের ডেকে ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দিলে তৎকালীন বিদ্যালয়ের স্বঘোষিত প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম গাজী ওরফে টিপু টাকা হালাল করতে নতুন ফন্দি আঁটেন আর এর মদদ দেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ভৌমিক।

সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ শেখ অবসরে গেলে তাদের সুবিধা মতো বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ভৌমিককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন অর্থ বিষয়ক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছেন বল অভিযোগ রয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে এসএসসি’র বাড়তি টাকা সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, এখন আমি কি বলবো। আমার একটি হাত পাশে নেই। তবে আমরা প্রশাসনের নির্দেশক্রমে টাকা শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টাকাটা এখনো ভাগাভাগি হয়নি এমনটাই জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক কর্মচারীরা।

শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মতে বাড়তি টাকা নেওয়ার সুযোগ না থাকলেও বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সুচতুর শিক্ষকগণ কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) নামে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে ২ হাজার টাকা বাড়তি আদায় করেন। এতে ২ শত এর মতো শিক্ষার্থীর নিকট থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও জানা যায়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌখিকভাবে টাকা ফেরৎ দেওয়ার পরামর্শ দিলে গত ২৫ ডিসেম্বর বুধবার সকালে সকল অভিভাবকদের ডেকে বাড়তি টাকা তাদের সন্তানদের শতভাগ ভালো ফলাফলের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আপনারা যারা টাকা ফেরৎ নিবেন তাদের সন্তানদের অতিরিক্ত ক্লাস বা কোচিং করানো হবে না। এবং এরা ভালো ফলাফলও করতে পারবে না। তাই টাকা যারা ফেরৎ নিবেন না তাদের সন্তানদের অতিরিক্ত ক্লাস বা কোচিং করানো হবে। ইতিপূর্বে স্থাণীয় সাংবাদিকরা এই বাড়তি টাকার বিষয়ে অনেক বারাবারি করেছে। আমরা আপনাদের টাকা ফেরৎ দিয়ে দেব তবে আপনাদের সন্তানদের কোচিং করাবো না। এতে অভিভাবকদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়। এরপর টাকা যায়েজ করতে অভিভাবকদের কাছ থেকে কায়দা করে গুটিকয়েক শিক্ষকদের সাজানো অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। এই অঙ্গীকারনামা কোন অভিভাবক নিজের থেকে লিখে আনেন নাই। তবে ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসানুল হক শিপন এর সামনে স্বীকার করেন কতিপয় শিক্ষকগণ।

একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দেখেন আমাদের সন্তানরা আজও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আজ এইসব শিক্ষকদের সাথে বারাবারি করলে আমাদের সন্তানদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন কয়েকজন শিক্ষক। আমাদের দিয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে একপ্রকার জোরপূর্বক। সন্তানদের য়াতে ভালো হয় তার জন্য স্বাক্ষর করেছি।”

ঐদিন শিক্ষক নজরুল ইসলাম গাজী মাইকে বলেন, এই বিষয় নিয়ে কোন সাংবাদিকের সামনে কেউ মুখ খুলবেন না।

এবিষয়ে একাধীক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিদ্যালয়ে কোনপ্রকার কোচিংয়ের সুযোগ নেই। সেই ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের চলমান সময় ১০টার আগে ও বিকাল ৪ টার পরে যদি ক্লাস নেওয়া হয় তবে সেটা বাড়তি ক্লাস বলে গণ্য হবে। তবে এখানে সে বিষয়ের কোন তোয়াক্কা করেন নাই বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। একই সময়ে বিদ্যালয়ের ক্লাস ও কোচিং ক্লাস করিয়েছেন তারা।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ কুমার ভৌমিক বলেন, বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছরে ১৩৮ জন সাধারণ ও ৮০ জন কারিগরি বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। প্রত্যেক মাসে ৫ শত টাকা হারে ৪ মাসের কোচিং বাবদ ২ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। এবং অভিভাবকরা আমাদের নিকট এবিষয়ে কোন অভিযোগ করবে না মর্মে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। আর আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলেই টাকাটা শিক্ষকদের মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি।

এবিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কর্পোরেট নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি তার বক্তব্য লিখে দেন। এবং হুবহু প্রকাশ করতে বলেন,
আপনার উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে কোনো ছাত্র অথবা কোন অভিভাবক সরাসরি আমার নিকট আসেন নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের গৃহীত টাকার হিসাব আমাকে দেখিয়েছেন। কোচিং কোর্স ক্যালেন্ডার, স্টাডি প্ল্যান, ক্লাস রুটিন, পরীক্ষার সময় সূচি ইত্যাদির বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত ডকুমেন্ট দিয়েছেন। কোন শিক্ষার্থী কত টাকা জমা দিয়েছেন সেটাও দেখিয়েছেন । চার মাসের কোচিং এবং পরীক্ষা বাবদ উক্ত টাকা তারা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
তাদের প্রদর্শিত অঙ্গীকারনামা অনুসারে অভিভাবকগণ স্বেচ্ছায় উক্ত কোচিং কার্যক্রমের ফি বাবদ অর্থ জমা দিয়েছেন।
তবে আজ পর্যন্ত সংক্ষুব্ধ কোন ছাত্র বা অভিভাবক আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করেন নি।