নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরগুনার পাথারঘাটা পৌরশাখার যুবদলের যুগ্ন আহব্বায়ক ও সদ্য বহিষ্কৃত জাতীয়তাবাদী ওলামাদলের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মাওলানা শামীম আহমেদ এর পিএস আল হাদীদকে বরগুনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ আদালত গত ২৪/০৫/২০২৫ ইং তারিখে জেল হাজতে প্রেরন করেন। এর আগে প্রবাসীর স্ত্রী সুমাইয়া আকতারের ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় আদালত ওয়ারেন্ট জারী করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে
এই আল হাদীদ একজন মাফিয়া। তিনি মাওলানা শামীমের একজন বিশ্বস্ত সহকর্মী এবং মাওলানা শামীম এর মদদে এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করত এই আল হাদীদ। একাধিক লোকের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুমাইয়া আক্তার চাঁদা না দিতে চাইলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও প্রদান করেন এই সন্ত্রাসী।
পরে সুমাইয়া আক্তার তার বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং সংবাদ সম্মেলন করে আল হাদীদ এর বিচার দাবি করেন। তাছাড়া মাওলানা শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মদদ দেয়ার অভিযোগ আনেন। মাওলানা শামীমকে মুঠোফোনে আল হাদিদ এর বিরুদ্বে অভিযোগ জানালে মাওলানা শামীম কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো জমি দখল করতে তার পিএস আল হাদীদকে সহায়তা করেন বলে জানান জমির মালিক প্রবাসীর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার।
ঘটনা সূত্রে জানা যায় যে, মাওলানা শামীম এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল এবং ছাত্রদলের কিছু সংখ্যক অসাধু নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে অবৈধ ভাবে লুটপাট, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজী, ইজারা বানিজ্য, বাসটার্মিনাল ও মাছবাজার দখল, কমিটি বাণিজ্য এবং ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থেকে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। যার মদদদাতা হিসেবে ছিলেন মাওলানা শামীম।
তাই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল থেকে বহিষ্কার হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা শামীম আহমেদ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা এবং অ্যাডভোকেট মাওলানা মোহাম্মদ আবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাওলানা শামীম আহমেদ এর সাথে কোনরূপ সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখার জন্য বিশেষভাবে অনরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাওলানা শামীম আহমেদ নামে এই প্রবাসী লন্ডনে বসাবাস করার সুবাদে নিজেকে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ দাবি করে বরগুনা জেলাধীন পাথরঘাটা ও বামনায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেন। পাশাপাশি তার প্রশ্রয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পাথরঘাটা ও বামনায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে সক্রিয়।
মাওলানা শামীম আহমেদ নিজেকে “সাউথ সী গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ অফ কোম্পানি” এর চেয়ারম্যান দাবি করে থাকেন তবে বাস্তবে কথিত এই নামে কোন গ্রুপ অফ কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে যোগসাজশের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল তাকে বহিষ্কার করা হয়।