আব্দুল মাবুদ মোহাম্মদ ইউসুফ, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি:
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় অবশেষে মুখোশ খুলে পড়েছে এক কুখ্যাত দালাল ও প্রতারকের। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও অসন্তোষ আজ রূপ নেয় গণপ্রতিরোধে, যেখানে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগে প্রতিহত করা হয় ইয়াবা ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও ছদ্মবেশী সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাদশার ছোট ছেলেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনোহরদী কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বাদশার ছোট ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি এবং সাংবাদিকতার আড়ালে প্রতারণা করে আসছিল। সে হাফিজপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিজের পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক কর্মীদের হয়রানি করত। এসব কর্মকাণ্ডে তার ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল ক্ষমতাসীন দলের কিছু বিতর্কিত নেতা, বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ূনের পুত্র সাদীর সাথে তার সখ্যতার কথাও উঠে এসেছে এলাকাবাসীর অভিযোগে।
স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তি নিজের রাজনৈতিক পরিচয় বদলাত। এক সময় নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলে পরিচয় দিতেও দ্বিধা করত না, পরে বিএনপি বা গণঅধিকার পরিষদের নামে চলাফেরা করত, যেন রাজনৈতিক সুযোগের ভিত্তিতে রং পাল্টানোই তার অভ্যাস।
তার এসব অপকর্ম দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাবাসীর নজরে ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। অবশেষে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় ছাত্র ও সাধারণ মানুষের। আজ ১১ জুন দুপুর ১২টার দিকে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্থানীয় ছাত্রনেতা আব্দুল জব্বার তাকে আটক করে। এরপর আরোও কিছু ছাত্রজনতা জড়ো হয়ে তাকে ঘিরে ধরে এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তুলে ধরে মুখোশ খুলে দেয় জনতার সামনে। চরম ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাকে গণধোলাই দেয়।
এ সময় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বহু নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবার।
এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, “যে কাজ এতদিন কেউ করতে পারেনি, তা আজ সাহসী ছাত্ররা করে দেখিয়েছে। এ যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়।”
আবার কেউ কেউ বলছে, তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ মানবতার ফেরিওয়ালা এমনন আচরণ ঠিক হয়নি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এই ঘটনার পর মনোহরদী এলাকায় ফের একবার আলোচনায় উঠে এসেছে সাংবাদিকতার আড়ালে দালালি, রাজনৈতিক দ্বিচারিতা এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা—যা আগামীতে কঠোরভাবে রোধ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।