নিজস্ব প্রতিবেদক কিশোরগঞ্জ:
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গড়বিশুদিয়া টু পোড়াবাড়িয়া হয়ে চরকাটিহারী ও চরহাজীপুর টু হাজিপুর বাজার পর্যন্ত বন্যাকবলিত চরাঞ্চল রক্ষায় বেরিবাঁধের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি ওই এলাকায় প্রবেশ করে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার লোকজন।তাই ভুক্তভোগীরা ওই বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জুড়ালো দাবি জানিয়েছেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিগত কয়েক যুগ আগে উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকার কৃষি ফসল রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ওই বেরিবাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল । গত কয়েক বছর আগে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ সংস্কার করা হলেও সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রতিদিন শত শত ট্রাক-লরি, টমটম,অটোরিকশাসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও পথচারী চলাচল করে ঝুঁকি নিয়ে।ফলে প্রতিনিয়ত সড়কে কোন না কোন স্থানে ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে প্রাণহানির ঘটনাও।সড়ক দিয়ে গর্ভবতী নারী শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াত এখন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমী এতদঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে চরাঞ্চলের ওই গ্রামগুলোকে বন্যা কবল থেকে রক্ষা করার জন্য বেরিবাঁধের যে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল তা ভেস্তে যাবে।কিন্তু রাস্তাটির সংস্করণে কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী,পথচারী ও যানবাহনের চালক।উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চর কাটিহারী, চরহাজীপুর,চরহটর আলগী , হাজিপুর গ্রামে বিস্তৃর্ণ ফসলি মাঠে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। এসব অঞ্চলের উৎপাদিত শাকসবজি স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়।ফলে এসব অঞ্চলের স্থানীয় কৃষকরা উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে উৎপাদিত ফসল ও শাকসবজি স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করতে কষ্ট হচ্ছে। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে অনেক কাঁচা শাকসবজি।
স্থানীয় চরাঞ্চলের বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, আলামিন, শাহজাহানসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেরিবাঁধটি জরাজীর্ণ ও খানাখন্দে ভরা থাকলেও কর্তৃপক্ষের লোকজন কেন যেন উদাসীনতা আমাদের বোধগম্য নয়। এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জিনারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম রুহিত জানান, এ বেরিবাঁধটি সংস্কারের জন্য এলজিইডি কতৃপক্ষের নিকট বহুবার আবেদন জানানো হলেও তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অজুহাত দেখিয়ে গড়িমসি করছেন। তবে দ্রুততার সহিত সংস্করণ করা না হলে অত্র এলাকায় ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে । তাই ওই বেরিবাঁধটি দ্রুত সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরী।এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী গালিব মোর্শেদ জানান,ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধটি সংস্করণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত সংস্করণের কাজ শুরু হবে।