নবিজুল ইসলাম নবীন,নীলফামারী প্রতিনিধি:
রেলওয়ের কর্মকর্তা আনসার আলী কর্তৃক একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে আইনগত সহায়তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী। মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকালে নীলফামারী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী জানান, তিনি সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার স্টোর ডিপার্টমেন্টে অস্থায়ীভাবে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মস্থলে পরিচয় হয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আনসার আলীর সঙ্গে। তিনি নিজেকে ডেপুটি ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিয়ে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত যোগাযোগ করেন এবং সরাসরি দেখা করার জন্য অনুরোধ জানান।
ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর চাকরি সংক্রান্ত আলোচনার কথা বলে রাজশাহীতে ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা তাকে পরিকল্পিতভাবে একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে খাবারের সঙ্গে একটি জুস খাওয়ানোর পর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন এবং পরে ধর্ষণের শিকার হন বলে দাবি করেন। পরবর্তীতে একই কৌশলে চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়েও একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ তার।
এ ঘটনায় ২০২৫ সালের ৩ মার্চ তিনি সৈয়দপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং : জিআর-৩/২৫)। এরপরও অভিযুক্ত কর্মকর্তা পুনরায় চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে যোগাযোগ চালিয়ে যান। ভুক্তভোগী জানান, বিষয়টি পরিবার জানার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি তাদের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেখানে একরাত অবস্থান করেন। তবে পরদিন সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি চলে যান।
পরবর্তীতে তিনি রেল ভবনে উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে, অভ্যন্তরীণ তদন্তে অভিযুক্ত কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হন। তবে এখনো আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একজন নারী হিসেবে আমি চরম মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিপীড়নের শিকার হয়েছি। আমি চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
অন্যদিকে অভিযুক্ত রেল কর্মকর্তা আনসার আলী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতেই এসব প্রচার করা হচ্ছে।
