ঢাকাবুধবার , ১৮ জুন ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজবাড়ীর পাংশায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ভাঙচুর ॥ আহত ১১

মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
জুন ১৮, ২০২৫ ৬:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আমিরুল হক,রাজবাড়ী প্রতিনিধি:

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কসবামাজাইল গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে মোসলেম খা গ্রুপের আহতরা হলো, দীঘলহাট গ্রামের মোঃ চিনির উদ্দিন (৫৫), আশরাফুল (৪০), মোঃ শাকিল মন্ডল (২০), নজরুল ইসলাম (৪৫), আনোয়ার হোসেন (৪০), তুহিন (১৭) ও বিপুল মন্ডল (৪০)। নামজুল হুদা গ্রুপের  কসবামাজাইল গ্রামের আজমল হোসেন বাবু (৫৫), নটাভাঙ্গা গ্রামের  লুৎফর খান (৭৫), সলুয়া গ্রামের ইকবাল মল্লিক (৫০) ও সলুয়া গ্রামের হযরত আলী (৩৫)। এদের মধ্যে লুৎফর, ইকবাল, আনোয়ার ও তুহিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অন্যান্যরা পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে কসবামাজাইল গ্রামের আইয়ুব মাস্টারের মোড়ে এ সহিংস হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই এলাকায় কসবামাজাইল ইউনিয়নের সুবর্ণখোলা গ্রামের মৃত আমির আলী খার ছেলে মোসলেম খা, দীঘলহাট গ্রামের মৃত আলী মন্ডলের ছেলে বক্কার মন্ডল ও মৃত আফজাল মন্ডলের ছেলে হুজুর আলী সহ শতাধিক লোক একটি গ্রুপ ও অপর গ্রুপের মৃত শামসুল হুদার ছেলে নাজমুল হুদা, মৃত আলতাব হোসেনের ছেলে আজমল হোসেন বাবু, আমিরুল ও আকাইয়ের ছেলে তুল্লা ও তাদের দেড় শতাধিক সমর্থকদের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মঙ্গলবার এ দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়।

হামলায় কসবামাজাইল গ্রামের আজমল হোসেন বাবু, গোকুল মন্ডল, সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার ফারুক মিয়া, বিপুল মিয়া, বিল্লাল হোসেন মিয়া, জামাল মন্ডল ও কুদ্দুস মন্ডল সহ ডেমনামারা গ্রামে ২টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বক্কার মণ্ডল বলেন, “ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা তাদের জানিয়েছিলাম, আজকের দিনে কোনো ধরনের প্রোগ্রাম না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা জানায়, যে কোনো মূল্যে তারা অনুষ্ঠান করবে। এরপর নাজমুল, আমিরুল, বাবু ও তুল্লার নেতৃত্বে একটি দল ঢাল-সড়কি নিয়ে নটাভাঙ্গা থেকে কসবামাজাইলের দিকে অগ্রসর হলে আমাদের পক্ষের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।”

স্থানীয় নাজমুল হুদা বলেন, “আমরা কোনো ধরনের সংঘর্ষে যেতে চাইনি। আমাদের পূর্বনির্ধারিত একটি কর্মসূচি ছিল, যা শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে আমাদের অনুষ্ঠানে বাঁধা দিতে আসে এবং প্রথমে তারা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দ্বারা সজ্জিত হয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। আমরা আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ করি মাত্র। আমাদের পক্ষের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা আমাদের পক্ষের কয়েকজনের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এ সংঘর্ষে আমাদের কোন দায় নেই। আমাদের পক্ষ থেকে সাইফুল ইসলাম মিয়া বিপুল বাদী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত কামনা করছি।”

থানায় অভিযোগকারী সাইফুল ইসলাম বিপুল মিয়া বলেন, “আমাদের পূর্ব ঘোষিত মিটিং ছিলো। সেখানে যোগ দিতে আমরা আমাদের লোকদের নিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম। অতর্কিতভাবে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। পরে তারা আমাদের বাড়ি ঘরেও হামলা চালায়। এসময় তারা ৮-৯ টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। আমি এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি।”

এ ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। পাংশা মডেল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “কসবামাজাইলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে এমন সংবাদে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে উভয়পক্ষের উত্তেজনা বিরাজ করলে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১১ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম বিপুল মিয়া ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।”