আলি হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
দেশ ছাড়লেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী মাহিয়া মাহি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চেকইন দিয়ে বিমানের কয়েকটি ছবি আপলোড করেন সামাজিকমাধ্যমে। ক্যাপশনে লেখেন, ‘আচ্ছা, ধন্যবাদ, বিদায়।’ নিউইয়র্ক থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী নিজেই। তবে কী উদ্দেশ্যে তিনি সেখানে গেছেন, তার সঙ্গে আর কে ছিল সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছুই বলেননি।
নিজের নির্বাচনি প্রচারের সময় ‘সেই বিএনপি আর না’ শিরোনামে বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী প্রোপাগান্ডামূলক একটি কবিতা পড়েন মাহিয়া মাহি। সেই কবিতা সম্প্রতি ভাইরাল হয়। নানাজন শেয়ার দিতে থাকেন।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, মাহিয়া মাহি দেশে বেশ ভয়ে ছিলেন। বিগত কয়েক বছরে আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় ও পদপদবি বাগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিয়ে করেন গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতাকে। নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের চেষ্টাও করেন। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে ডামি প্রার্থী হন। নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলীয় কার্যক্রম থেকে সরে গেলেও এ সময় তার সংসার ভেঙে যায়। গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকারের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ফেসবুকে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন সরব। তবে নাশকতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে চিত্রজগতের কয়েকজন অভিনেত্রী আটক হলে কিছুটা দমে যান মাহি। নুসরাত ফারিয়া আটকের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘কী লজ্জা, সে শুধুই একজন শিল্পী।’ এর আগে থেকেই দেশত্যাগের উপায় খুঁজতে থাকেন বলে জানা যায়।
সূত্রটি আরো নিশ্চিত করেছে, মাহিয়া মাহিকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছেন কথিত চিত্রনায়ক ও ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডিএ তায়েব। গত ১১ জুন মাহি ডিএ তায়েবকে ম্যানশন করে একটি পোস্ট দেন। সেখানে লেখেন, ‘ভাইয়া, তোমার জন্য মনের অজান্তে মন থেকে অনেক দোয়া আসে।’ গত মাসে কাউকে ম্যানশন না করলেও এমন আরো কয়েকটি গায়েবি কৃতজ্ঞতায় পোস্ট দেন মাহি। মাহি-সংশ্লিষ্ট একজন জানিয়েছেন, পোস্টগুলো ছিল ডিএ তায়েবকে উদ্দেশ করেই।
‘ভালোবাসার রঙ’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হয় মাহিয়া মাহির। অভিনয় দক্ষতা তাকে এগিয়ে দেয় অনেক দূর। সিনেমাপ্রেমীদের মনে জায়গা করে নেন তিনি। একপর্যায়ে তার জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। ২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে বিয়ে করেন মাহি। ২০২১ সালে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তিনি। ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রকিব সরকার নামে এক রাজনীতিককে বিয়ে করেন মাহি। তাদের সংসারে জন্ম নেয় ছেলে ফারিশ। বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ভাঙে সেই সংসারও। মাহিকে সর্বশেষ অতিথি চরিত্রে দেখা যায় ‘রাজকুমার’ সিনেমায়। সেখানে শাকিব খানের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। তার আগে মুক্তিপ্রাপ্ত বেশিরভাগ সিনেমাই ফ্লপ করেছেন মাহি।