নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১ গত ০৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখ হতে অদ্যবধি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা চলমান রয়েছে। চাঞ্চল্যকর অপরাধী ১১৭জন, আরসা সদস্য-১৫ জন, হত্যা মামলায় ১৪০ জন গ্রেফতার করেছে। ধর্ষণ মামলায় ৫৭ জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ১৯ জন গ্রেফতারসহ ৯১ টি অস্ত্র, ১২৯৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ৩১৬ জনকে সক্ষম হয়েছে। অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে র্যাব-১১। পাশাপাশি ৪৯ জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ৫৮ জন ভিকটিম উদ্ধার এবং ছিনতাইকারী ও ডাকাত ৬৫ জন, জেল পলাতক ৩৭ জন, প্রতারণার আসামী-১৩ জন সহ অন্যান্য অপরাধী প্রায় ৩২০ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব-১১ জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৪ মে ২০২৫ তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন জিমখানা সাকিনন্ত বটতলা রাসেল পার্ক দক্ষিন পাশে নিরাপত্তা গেইট সংলগ্ন এলাকায় একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ভিকটিম এর বোন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩/৭৯ তারিখ-১৫ মে ২০২৫, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
ঘটনা সূত্র ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, ভিকটিম নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন নতুন জিমখানা গলি রোডের জনৈক স্বপন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। ভিকটিম এবং আসামী মাহিন আহম্মেদ ভেলকি মাহিম (১৪), নাঈম আহমেদ (২১), ৩। প্যাকেজ ফাহিম (২৪), সাঈম (২৪) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ১৪/০৫/২০২৫ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ২২৪৫ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন রাসেল পার্ক এলাকায় কথা কাটা-কাটির একপর্যায়ে বিবাদী ভেলকির নেতৃত্বে অন্যান্য হত্যাকারীরা একত্রিত হয়ে ভিকটিমকে সুইচ গিয়ার (ছোড়া) ও চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পথচারীরা মুমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিমকে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। পুলিশ সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মর্গে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-১৩/৭৯ তারিখ- ১৫ মে ২০২৫, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড। মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তার নিবিড় তদন্তে গ্রেফতারকৃত আসামী তানভীরের ঘটনার সহিত জড়িত থাকার প্রমান পায়। আসামী তানভীর জিমখানা বস্তি এলাকায় মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে। চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের কারনে তার নামে প্রায় ডজন খানেক মামলা নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় রয়েছে। গত ইং ২০২৪ এর ডিসেম্বরে সদর থানার একটি আভিযানিক দল ঐ এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে মারাত্মকভাবে আক্রমনের শিকার হয়। উক্ত আক্রমনের নেতৃত্বে ছিল গ্রেফতারকৃত আসামী তানভীর। সে একজন দূর্ধর্ষ মাদক সম্রাট এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসী নামে বস্তি এলাকায় পরিচিত। উক্ত ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পলাতক আসামী মোঃ তানভীর (২৩)’কে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন জিম খানা বস্তি এলাকা হতে ১৯/০৬/২০২৫ ইং তারিখ ১৯৩০ ঘটিকায় র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উল্লেখ্য যে, আসামীর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন থানায় হত্যা চেষ্টা, মাদক, চুরিসহ ১২ টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।