মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
চৌমুহনা দেওয়ানী জামে মসজিদ এলাকাটি শহরের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের জন্য এখানে অসংখ্য মুসল্লি আসেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মসজিদের সামনের ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ মৌসুমী ফল বিক্রেতাদের অসংখ্য ভ্যানগাড়ি দ্বারা দখল হয়ে আছে।
ফল বিক্রেতারা ফুটপাতের উপর দীর্ঘ লাইনে ভ্যানগাড়ি সাজিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে নামাজ আদায় করতে আশা মুসল্লিগণ তাদের যানবাহন কোথাও সঠিকভাবে রাখতে পারছেন না। অনেকে বাধ্য হয়ে বাইক বা মোটরসাইকেল অনেক ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনে রেখে নামাজে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু নামাজ শেষে বের হয়ে দেখতে পান, ফলভর্তি ভ্যানগাড়ির জন্য তাদের নিজস্ব যানবাহন বের করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
মুসল্লিদের মন্তব্য ও বাস্তব চিত্র:
বিভিন্ন মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
আমরা নামাজ পড়তে আসি, কিন্তু বাইক রেখে নামাজ আদায় করাটাও অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে। নামাজ শেষে ফিরে এসে দেখি বাইক বা গাড়ি পুরোপুরি ভ্যানগাড়ির ফাঁদে পড়ে আছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যারা রাস্তা ও ফুটপাতে ভ্যানগাড়ি রেখে জায়গা দখল করে রাখছেন, তাদের অনেকেই নামাজ আদায় করতেও আসেন না। অথচ তারা এমনভাবে আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন,
“আমরা গরীব মানুষ, কোথায় যাব❓”
তবে প্রশ্ন থেকে যায়—নিজেরা নামাজে না এসে, অন্য মুসল্লিদের নামাজ আদায় ও যানবাহন ব্যবস্থাপনায় বাধা সৃষ্টি করা কতটা যৌক্তিক❓ গরীব হওয়া মানবিক বিবেচনার জায়গা হতে পারে, কিন্তু জনসাধারণের চলাচল ও ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা কি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য❓
সমাধান ও সুপারিশ:
ট্রাফিক পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ নজরদারি প্রয়োজন :
বিশেষ করে চৌমুহনা,চাঁদনীঘাট ব্রীজ,এম সাইফুর রহমান রোড, কুসুমবাগ,পশ্চিম বাজার জামে মসজিদ, এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি এবং নজরদারি আরও নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান জনসাধারণ, যেন ফুটপাত ও রাস্তা অবৈধভাবে দখল না হয়।
ফল বিক্রেতাদের জন্য নির্ধারিত বিক্রয় এলাকা:
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট বিক্রয় স্থান বরাদ্দ করা যেতে পারে, যাতে তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন এবং জনসাধারণের চলাচলে কোনো বাধা না হয়।
সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান:
মসজিদের সামনের এলাকা ও আশেপাশে “ফুটপাত দখল নয়”, “নামাজিদের পথ উন্মুক্ত রাখুন” এমন বার্তা সম্বলিত ব্যানার বা সাইনবোর্ড স্থাপন করা যেতে পারে।
মসজিদ কমিটির কার্যকর ভূমিকা:
মসজিদ পরিচালনা কমিটি স্থানীয় প্রশাসন, ট্রাফিক বিভাগ ও পৌর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় যৌথভাবে সমাধানমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেন।
এটি একটি নাগরিক ও ধর্মীয় গুরুত্বসম্পন্ন সমস্যা, যার সমাধানে প্রশাসনিক উদ্যোগ, সামাজিক সচেতনতা এবং ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ একত্রে প্রয়োজন। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি আরও বড় জনদুর্ভোগের কারণ হতে পারে।