নুরুল আবছার নূরী,ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভার সদর বিবিরহাট বাজারে একটি সাত তলা ভবনের পাশে আর একটি ছয়তলা ভবন গায়ে হেলে পড়েছে।
ভবনের বাসিন্দারা বলেন কিছু দিন দুটি ভবনের মাঝে একহাত ফাঁকা ছিল।কিন্তু এখন সাততলা ভবনটি ছয়তলা ভবনের সাথে হেলে পড়েছে। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের বিপরীতে ১০০ গজ সামনেই বিএস ৭৮৫৫ নং দাগের পৌরসভার বাসিন্দা মোঃ আবদুল খালেক ৩১ শতক নাল জমিতে নির্মাণ করেছেন ৭ তলা ভবনটি।যেটি আর একটি ভবনের উপর টেকে আছে। ভবনের বাসিন্দাদের দাবি পৌর কর্তৃপক্ষ ভবনটির নকশা এখনো পর্যন্ত বাতিল করছেন না।ঝুকিপূর্ণ ভবনটি যে কোনো মুহূর্তে ধসে বড়ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে পড়ে। স্হানীয় সূত্রমে ভবনের মালিক আবদুল খালেক ২০১৯ সালে ফটিকছড়ি পৌরসভা থেকে ৬তলার অনুমোদন নিয়ে ৭তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। কিন্তু অনুমোদন ছাড়াই আরও অতিরিক্ত একতলা নির্মাণ করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ এতে বাধাপ্রদান করেননি। পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে আঁতাত করেই আরও একতলা নির্মাণ করেছেন।২০২১-২০২২ সাল থেকে বাড়ির মালিক সেখানে ১১টি পরিবারকে ভাড়া লাগিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।
স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণের প্রথম দিকে ৩/৪ ইঞ্চি হেলে পড়ে ভবনটি। সেই সময় এলাকাবাসি মৌখিক ভাবে এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।অভিযোগ করার পর পৌর কর্তৃপক্ষ ভবনটি মালিককে দ্রুত ব্যবস্হানিতে মালিককে তাগিদ দেন।কিন্তু অজানা কারণে তা বেশিদিন এগোইনি। ফলে ভবনটি ঝুকিযুক্ত হিসেবে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।ক্রমাম্বয়ে ভবনটি পাশাপাশি হেলে ঝুকিঁয়ে আছে। ইতিমধ্যে ভবনটি ১৮-২০ ইঞ্চি হেলে ঠেকেছে অন্য ভবনের উপর।ফলে আসেপাশে ভবনের বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভবনের মালিকসহ ২১ পরিবার বসবাস করেন। পাশের ভবনের উপর ভর করেছে ঝুকিপূর্ণ এই ভবনটি। খালি চোখে অনেকই দেখলেও মালিকের চোখে দেখে না।
ভবনে পাশ বসবাসরত মোঃ তসলিম বলেন এটির অবস্থা খুবই খারাপ।এটি ঝুকে পড়েছে ১৮-২০ ইঞ্চি। ঝুকিপূর্ণ ভবনটি বহু লোক থাকলেও দেখার কেউ নেই। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড়ধরেন দূর্ঘটনা।
ভবনটির মালিক প্রবাসে থাকেন বহু চেষ্টা করে ও তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মোটো ফোনে কলদিলে ও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ভবনটি তত্বাবধান করেন তাঁর স্বজন মোঃ নেজাম উদ্দিন বুলবুল।যোগাযোগ করা হলে মোঃ নেজাম উদ্দিন বুলবুল সাংবাদিক জেনে শুরুতেই বিমাতা সুলভ আচরন করেন তিনি বলেন বহু সাংবাদিক বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। আপনি কে? আপনাকে এবিষয়ে বলব কেন? পরে তিনি বলেন ভবনটি করার আগে কর্তপক্ষ অনুমোদন দিয়েছেন। প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে ভবনটির কাজ করা হয়েছে।
ফটিকছড়ি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রাজিব বড়ূয়া বলেন ভবনটি ছয়তলার অনুমোদন আছে। পরে তিনি অন্যায় ভাবে আর সাততলা করেছেন। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সংলিষ্ট কনসালটিং প্রতিষ্ঠান থেকে ঝুঁকিমুক্ত সনদ নিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী আইনী ব্যবস্হা প্রক্রিয়াধীন।
ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন জেনেছি ভবনটি কিঞ্চিৎ হেলে পড়েছে। যেহেতু এখনো কোনো স্ট্রাকচালার কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই বাসিন্দারা এখনো আছে। বিশেষঞ্জদের মতামত পেলে বিষয়টি দেখা হবে। তবে বিষয়টি পুরো ইউ এন ও উপর নির্ভরশীল।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট)এর প্রকৌশলী সঞ্চয় দেব নাথ বলেন, ভবন হেলে পড়া মানে ত্রুটি-বিচুত্যির অংশ এর দায় কেউ এড়াতে পারে না। আশা করি স্হানীয় প্রশাসন দেখে ব্যবস্হা নেবেন।
এই ব্যপারে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন ঠিক কি কারণে ভবনটি হেলেছে, সে বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। ভবনের বাসিন্দারা কেউ বলেছেন, আগে থেকে কাণিকটাই হেলেছিল। কেউ বলেছেন, ইদানীং এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি দেখে দ্রুত ব্যবস্হা নেব।