তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল যেন রোগীদের জন্য দুর্ভোগের আরেক নাম। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ, ডাক্তার সংকট, অপরিচ্ছন্ন ও অনিয়মতান্ত্রিক খাবার, সরঞ্জাম থাকলেও টেকনেশিয়ানের অনুপস্থিতি, জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া এবং ডায়ালাইসিস সেবা শুধু তথাকথিত ‘ভিআইপি’দের জন্য সীমাবদ্ধ—এসব অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
স্থানীয় জনগণ ও রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে এমন অসংখ্য অভিযোগ উঠে এসেছে বারবার। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালালেও ‘অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি’ এই মন্তব্যে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ জেলার সাধারণ মানুষ।
প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে যে লাইনে দাঁড়িয়ে একজন রোগীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, সেই দৃশ্য কি দুদকের চোখে পড়ে না? যেখানে ডায়ালাইসিস মেশিন রয়েছে, কিন্তু চালানোর মতো টেকনেশিয়ান নেই, সেখানকার বাস্তবতা কীভাবে অদৃশ্য থাকে দুদকের তদন্তে
জনগণ মনে করে, দুদকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকৃত দুর্নীতির চিত্র আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। হাসপাতালের অনিয়মের দায় যেমন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের, তেমনি সেগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় দুদকও সমানভাবে দায়ী।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠে দুদক কি সত্য লুকাতে এসেছে? তারা কি নিজ দায়িত্বে অমনোযোগী, না কি প্রভাবশালীদের চাপের কাছে নতজানু
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, “আমরা তাহলে কোথায় যাব?” রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ার কথা, সেই প্রতিষ্ঠান যদি নিজের চোখ বেঁধে রাখে, তবে দুর্নীতিকে কে রুখবে
জনগণ এখন দাবি জানাচ্ছে:
পুনঃতদন্ত করতে হবে জনগণের অংশগ্রহণে।
সাংবাদিক, সিভিল সোসাইটি ও রোগী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে।
দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে।
দুদকের ভেতরকার অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের তদন্ত করতে হবে।
জনগণের মুখ বন্ধ করা যাবে না। দুর্নীতির দায় লুকিয়ে নয়, স্বীকার করে সঠিক ব্যবস্থা নিলেই জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব।