ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১০ এপ্রিল ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তিন শহীদের রক্তভেজা বাগদা ফার্মের তিন ফসলী জমিতে জেলা প্রশাসকের EPZ নির্মাণের একতরফা ঘোষনা প্রত্যাখ্যান করে আদিবাসী-বাঙালীদের প্রতিবাদ সমাবেশ

Link Copied!

মোঃ জাহিদ হোসেন জিমু

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি।

আজ ১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জের কাটা মোড়ে, রাফায়েল হাঁসদা, আনিসুর রহমান ময়নুল, স্বপন শেখ ও বার্নাবাস টুডুর আহ্বানে ডাঃ ফিলিমন বাসকের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়।

হাতে তির-ধনুক, ফেস্টুন। মুখে প্রতিবাদের ঝড়। স্লোগান একটাই, ‘সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে ইপিজেড করা যাবে না। সাঁওতাল-বাঙালি এক হও। সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধ করো, করতে হবে। জেলা প্রশাসকের একতরফা ঘোষনা, বতিল কর করতে হবে……

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধার আয়োজনে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডা. ফিলিমন বাস্কে, বার্নাবাস টুডু, স্বপন শেখ, আতাউর রহমান সাবু, রেজাউল করিম মাস্টার, প্রিসিলা মুরমু, আনিসুর রহমান ময়নুল, বিটিস সরেন, রিপন বেসরা জয় প্রমূখ।

গত ২৬ মার্চের একটি অনুষ্ঠানে মাননীয় জেলা প্রশাসক কর্তৃক সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় সাঁওতালদের পৈতৃক জমিতে ইপিজেড নির্মাণের একতরফা ঘোষনা প্রত্যাখ্যান করে বক্তারা বলেন, এখানে ইপিজেড নির্মাণ করা হলে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি থাকবে না। তাই এখানে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে। এখানে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বক্তারা বলেন, কোনো উর্বরা ফসলি জমি নষ্ট করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরির সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হবে। এ ছাড়া কোনো জাতিকে পেছনে ফেলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু কিছু কুচক্রীমহল এসব উপেক্ষা করে তিন ফসলির জমিতে ইপিজেড গড়ার পাঁয়তারা করছে। এই জমি একসময় সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি ছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ হতো। চিনিকল যে শর্তে জমি রিকুইজিশন করেছিল, তা ভঙ্গ হয়েছে। ফলে ওই জমি পৈতৃকসূত্রে সাঁওতাল বাঙালিরা মালিক।

বক্তারা বলেন, বাপ-দাদার জমি রক্ষার্থে তিন শহীদের রক্তের স্মৃতি এখনো অমলিন, তাদের আত্মত্যাগকে তুচ্ছ করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বগদা ফার্মের জমিতেই একতরফা ইপিজেড পরিকল্পনা বস্তবায়নের ঘোষণা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং প্রত্যাখ্যান যোগ্য। জমির জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে জীবন দিতে হয়েছে। বর্তমানে জমিতে তাঁরা ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করছেন। শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ার অনেক সরকারি খাশ জমি পতিত রয়েছে। সেখানেও ইপিজেড হতে পারে। কিন্তু সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে ইপিজেড নির্মাণ যুক্তিযুক্ত নয়।

বক্তারা আরো বলেন, আমরা ইপিজেড নির্মাণের বিপক্ষে নই, তবে সাঁওতালদের রক্তে ভেজা বাগদা ফার্মের জমিতে ইপিজেড প্রকল্প বাস্তবায়ন করতেমদেয়া হবে না। জেলার বিভিন্ন জায়গায় খাস জমিসহ লাখ লাখ একর সরকারি জমি ভূমিদস্যুরা দখল করে আছে, সেগুলো উদ্ধার করার বিষয়ে সরকারি প্রশাসনের তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। অথচ ইকোনমিক জোন, ইপিজে, বন্দর, পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে আদিবাসী, প্রান্তিক কৃষকদের উচ্ছেদ করে তাদের ঘরবাড়ি, কৃষি জমি কেড়ে নিয়ে ভূমিহীন করার বেলায় প্রশাসনের একটি অংশ অত্যন্ত তৎপর।

বক্তারা দাবী করেন, অবিলম্বে গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মের কৃষি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা, আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলোর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সে কৃষিজমির আবাদ অব্যাহত রাখতে আন্দোলনরত সাঁওতাল আদিবাসী এবং তাদের সহযোগী বাঙালি কৃষক পরিবারগুলোকে লিজ দেওয়ার বন্দবস্ত জেলা প্রশাসনের কাছে ন্যস্ত করা, চলমান মামলাগুলোর নিষ্পত্তি সাপেক্ষে রিকুইজিশন পূর্ববর্তী জমির মালিক সাঁওতালদের উত্তরাধিকারী পরিবারগুলোকে স্থায়ী বন্দোবস্ত দেবার পদক্ষেপ নেওয়া এবং ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া তিন আদিবাসী সাঁওতালের পরিবারসহ নিহত-আহতদের সব পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া।