নিজস্ব প্রতিবেদন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাডাঙ্গা ইউনিয়ন মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। মাদকের কারবারে অনেকেই রাতারাতি হয়েছেন কোটিপতি। বিশেষ করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই ইউনিয়ন ঘিরে মাদকের একাধিক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে, যারা জাল বিস্তার করে সারাদেশে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছে ১০ মাস হয়ে গেল, কিন্তু এই ইউনিয়নে মাদক কারবারের চিত্র পাল্টায়নি। মাদকের সেই সিন্ডিকেট আগের মতোই সক্রিয়।
ফ্যাসিস্ট আমলে গড়ে ওঠা মাদক সিন্ডিকেটের গডফাদার নুরুল ইসলাম সহযোগি আমিনুল ইসলাম বাবু ও শরিফুল ইসলাম
জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা নিরাপদে থেকে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। মাদক সিন্ডিকেটের হোতারা নানাভাবে খোলস বদলে নতুন আধিপত্যের জাল বিস্তার করেছে। কেউ নাম লেখাচ্ছেন বিএনপির তালিকায়, কেউবা শীর্ষ নেতাদের প্রশ্রয়ে সচল রাখতে চান মাদক সিন্ডিকেট।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে মাদক সিন্ডিকেটের পুরো নিয়ন্ত্রণ এখন সদর উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামের হাতে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের ৩টি মামলা রয়েছে। ২০১৮ সালের গোড়াগাড়ী থানার একটি মাদক মামলা রাজশাহীর আদালতে বিচারাধীন। তার সঙ্গে আছেন আরেক আমিনুল ইসলাম বাবু ও শরিফুল ইসলাম । মাদক সম্রাট নুরুল ইসলাম। এদের সবার নামে মাদকের একাধিক মামলা আছে। মাদক সিন্ডিকেটের হোতারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকার মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন নুরুল ইসলাম। তিনি পাশের দেশ ভারত থেকে হেরোইন-ইয়াবা বাংলাদেশে আনেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন তার সহযোগীরা। নুরুল ইসলাম এলাকায় মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত। ভারত-বংলাদেশ দু’দেশেই তার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, নুরুল ইসলাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থান আমাদের সবসময়ই আছে। মাদক উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত আছে।
