ইমরান প্রধান
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ হাট থেকে আফসারাবাদ কলোনী রোড কামানডোবাঘাট ব্রিজ হয়ে চাঁদপাড়া বাজার পর্যন্ত গ্রামীণ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করলেও দীর্ঘদিন ধরে এর কোনো সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রানীগঞ্জ-চাঁদপাড়া বাজার রোডে কামানডোবাঘাট ব্রিজ থেকে শুরু করে বারপাইকেরগড় দরগা বাজার হয়ে বৈদড়-শেখালীপাড়া গ্রামের ভিতর দিয়ে চাঁদপাড়া বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের মতো কাঁচা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ ও কাদা জমে আছে। কিছু কিছু জায়গায় পানি জমে থাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় বড় ধরনের গাড়ি চলাচল করতে না পারলেও ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা অতিকষ্ট করে চলাচল করছে। কখনো কখনো গাড়ি কাদায় আটকে পড়ে আবার কখনো গাড়ি উল্টে গিয়ে অনেক দূর্ঘটনাও ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে তো বটেই, শুকনো মৌসুমেও রাস্তাটি চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রাস্তায় খানাখন্দ ও কাদা জমে থাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে অটোরিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকদেরও বিকল্প রুট ব্যবহার করতে হচ্ছে, যার ফলে রানীগঞ্জ থেকে চাঁদপাড়া বাজারে যেতে প্রায় ২ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হয়। চাঁদপাড়া ও শেখালিপাড়া গ্রামের একাধিক কৃষক জানান, “ধান-চাল বা রবিশস্য বাজারে নিতে হলে আমাদের দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়। এটা আমাদের জন্য বড় সমস্যা।”
এ নিয়ে কথা হলে ইজিবাইক চালক রেজাউল করিম বলেন, রানীগঞ্জ-চাঁদপাড়া বাজারের মাঝামাঝি বারপাইকেরগড় দরগা বাজার এলাকায় আমার বাড়ি হলেও রাস্তায় খানাখন্দ ও কাদা জমে থাকার কারণে প্রায় দেড় কিলোমিটার অতিরিক্ত রাস্তা ঘুরে বাড়িতে যাতায়াত করতে হয়। তাছাড়া অটোরিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করলে গাড়ির মোটর এবং কন্ট্রোল বক্স পুড়ে যায়।
অপরদিকে, চাঁদপাড়া বাজার এলাকার অটোভ্যান চালক লিটন চন্দ্র সরকার ও একাধিক ভ্যানযাত্রী জানান, “রাস্তাটা ভালো থাকলে এক হাট থেকে আরেক হাটে সহজেই যেতে পারতাম। এখন ঘুরে যেতে হচ্ছে, এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।”
বারপাইকেরগড় দরগা বাজারের মুদি দোকানদার নইবর আলী মন্ডল ও শাহজাহান মিয়া বলেন, “রাস্তার কারণে মালামাল আনতে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।” স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। এলাকাবাসীর জোর দাবি, রানীগঞ্জ হাট থেকে চাঁদপাড়া পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দ্রুত মেরামত বা পাকাকরণ করা হোক।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “রানীগঞ্জ হাট থেকে চাঁদপাড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি আমাদের তালিকাভুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ২.৫ কিলোমিটার রাস্তা ডিপিপি অনুমোদন হয়ে আছে। স্কীম পাঠানো হয়েছিল, কিছু ত্রুটি থাকায় সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠিয়েছে। আগামী অর্থবছরে রাস্তাটি টেন্ডার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমরা এলাকাবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।”