তরফদার মামুন মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারে এনসিপি’র নতুন জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে চরম উত্তেজনা। শুক্রবার রাত দশটার দিকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। অভিযোগ এনসিপি’র নামে আওয়ামী লীগপন্থীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে এবং এতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাস। বিক্ষোভকারীরা তাঁকে মৌলভীবাজার জেলায় “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া ছাত্ররা বলেন, “জুলাই বিপ্লবের আদর্শকে পাশ কাটিয়ে, অতীতের আন্দোলন সংগ্রামে অনুপস্থিত ও পরিচিতিহীন ব্যক্তিদের দিয়ে রাতের অন্ধকারে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।” তারা অভিযোগ করেন, নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত অনেকেই আওয়ামী লীগ বা তাদের সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তাদের ভাষায়, এটি একটি “পকেট কমিটি”, যা তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।
মামলার হুমকি ও কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবগতকরণ
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ভাষ্য অনুযায়ী, যখন তাঁরা এই গোপন ও বিতর্কিত কমিটির বিরোধিতা করেন, তখন প্রীতম দাস তাঁদের মামলা ও হামলার হুমকি দেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত এই কমিটি বাতিল করে পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
কমিটিতে কারা আছেন?
নতুন সমন্বয় কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন একজন ফার্মেসি ব্যবসায়ী—খালেদ হাসান। তার অধীনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়জন যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন:
ফাহাদ আলম, এহসান জাকারিয়া, মো. ইকবাল হোসেন, রুমন কবির, শামায়েল রহমান, নিলয় রশিদ, সানাউল ইসলাম সুয়েজ, শাহ মিসবাহ এবং সৌমিত্র দেব।
এছাড়াও সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন: এডভোকেট কৌশিক দে, জাহাঙ্গীর আলম, ভীমপল সিনহা, রাসেল থিংগুজাম, হোসাইন আহমদ, বৈশিষ্ট্য গোয়ালা সহ আরও ২১ জন।
কমিটির বৈধতা ও সময়কাল
এই কমিটিকে এনসিপি’র জেলা পর্যায়ে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৮ জুন। দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম যৌথভাবে এই অনুমোদন দেন। কমিটির মেয়াদ ধরা হয়েছে তিন মাস অথবা নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠিত না হওয়া পর্যন্ত।
শেষ কথা
ছাত্র-জনতা স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা আওয়ামী ঘেঁষা কারো নেতৃত্ব মানবে না। আন্দোলনের মূল চেতনায় বিশ্বাসী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে নতুন করে একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের জন্য তারা জোর দাবি জানায়।
