নুরুল আবছার নূরী
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক, কমনওয়েল জার্নালিজমর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফটিকছড়ি সরকারী করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র শ্রদ্ধেয় হাসান শাহরিয়ার।
বিশ্ব বরেণ্য এই সাংবাদিক ছোট বেলায় উনার চাচার কর্মস্থল ফটিকছড়ি মুনসেফ আদালতের মুনসেফ (বিচারক)’র সাথে শীতকালীন ছুটিতে বেড়াতে আসেন। যথা সময়ে মুনসেফ( নামটি স্মরণ করতে পারছিনা এখন) সরকারী চাকুরীর ছুটি না পাওয়ায় গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে ফিরতে পারেন নি। তখন সেই চাচা হাসান শাহরিয়ারকে ফটিকছড়ি করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। সেই সময়ের স্মৃতি খোজার সুযোগ হয় ২০১১ সালে খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের এক প্রশিক্ষণে ফটিকছড়ির এক সময়ের নির্ভিক সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরীর মাধ্যমে। তখন তিনি সেই করোনেশন স্কুলে আসার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রদীপদা উনাকে নিয়ে আসেন। আমি, সাত্তার, রফিক উনাদের বরণ করি। করোনেশন স্কুল, আদালত চত্বর, পুকুর পাড়, জজের বাস ভবন (যেটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ও ভুতের বাড়ি নামে খ্যাত) ঘুরে দেখেন। অনেক স্মৃতি চারণ করেন। করোনেশন স্কুলের দপ্তরী ও স্কাউট শিক্ষককে পেয়ে বেশ আলোচনা করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে চা দোকানে বসে বেলা বিস্কুট চা পান করেন। ডাক বাংলো সড়কে হেটে আসার সময় দেখা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর সাথে। যিনি তখন করোনেশন স্কুলের সভাপতি। পথে দাড়িয়ে বেশ হৃদ্ধতার আলোচনা শেষে হাসান শাহরিযার স্যার সাংবাদিক প্রদীপদাকে নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকা ফিরে যান। ফিরেই কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দীর্ঘ এসএমএস পাঠান আমরা সকলের মুঠোফোনে। তার কিছুদিন পর দৈনিক পূর্বকোণের বর্ষপূর্তি সংখ্যায় স্যার দেড় পাতা জুড়ে সেই সুনামগঞ্জ থেকে ট্রেন নাজিরহাট জংশনে আসা, চাঁদের গাড়ি করে ফটিকছড়ি আসাসহ, আমাদের সাথে দেখা, সব স্মৃতির এক বিশাল নাতিদীর্ঘ ইতিহাস রচনা করেন স্যার।
তার কিছুদিন পর ২০১২ করোনেশন স্কুলের শতবর্ষ উদযাপনের একটি প্রস্তুতি কমিটি হয়েছিল। অনাড়ম্বর অনুষ্টানের প্রস্তুতিও হলো। তখন সেই শতবর্ষ অনুষ্টানের ম্যাগাজিনে দিতে একটি লেখাও তৈরী করেছিলেন স্যার এবং বর্ষপূর্তি অনুষ্টানে আসার কথা ছিল। সঙ্গত কারণে অনুষ্টান হলো না। স্যারও আর আসলেন না। মাঝে মাঝে স্যার ফোন দিতেন, এসএমএস দিতেন। করোনেশন স্কুল আর আদালত ভবনের খবহর নিতেন।
২০২১ সালের ১১ এপ্রিল স্যার চলে গেছেন না ফেরার দেশে (ইন্নালিল্লাহি….রাজেউন)।